পাসপোর্ট এর মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করতে হয় এবং কতদিন আগে রিনিউ করলে যেকোনো ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায় এই বিষয়টি জানতে পারবেন এই পোস্টে।

বিদেশ ভ্রমণ করার জন্য পাসপোর্ট একটি জরুরি ডকুমেন্ট। যেকোনো দেশের ভিসা আবেদন করার জন্য কিংবা ভিসা ছাড়া যেসব দেশে ভ্রমণ করা যায়, সেসব দেশে যেতে চাইলে পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই, পাসপোর্টের মেয়াদ কবে শেষ হবে সেটি জেনে রাখা আবশ্যক।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষের পথে এলে অবশ্যই রিনিউ করা উচিত। নয়তো, ভ্রমণ করার সময় ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে। আরও বিস্তারিত জানতে শেষ অব্দি পড়ুন।

পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত দিন থাকতে রিনিউ করতে হয়

পাসপোর্ট এর মেয়াদ ৬ মাস থাকতে রিনিউ করতে হয়। কারণ, অনেক দেশের ভিসা আবেদন করার জন্য অন্তত ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হয় পাসপোর্টের। ৬ মাসের কম মেয়াদ থাকলে ভিসা প্রসেসিং করা হয়না। তাই, আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষের পথে এলে অবশ্যই রিনিউ করতে হবে।

এছাড়া, আপনি চাইলে যেকোনো সময় পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারেন। আপনার ইচ্ছে কিংবা আর্থিক সামর্থ্যের উপর নির্ভর করবে কখন পাসপোর্ট রিনিউ করবেন। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কিংবা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের দিনও চাইলে পাসপোর্টটি রিনিউ করতে পারবেন।

পাসপোর্ট নবায়ন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি। তাই, একজন ব্যক্তি যখন ইচ্ছে তখন তার পাসপোর্টটি নবায়ন করতে পারবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করবো কিভাবে

পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য Bangladesh E-Passport Portal ভিজিট করতে হবে। এরপর, নতুন একটি অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করে কিংবা পূর্বের অ্যাকাউন্টে লগইন করে আপনার পাসপোর্টটি রিনিউ করতে পারবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় পূর্বের পাসপোর্টের তথ্য দিতে হয়। তাই, আপনার পাসপোর্ট হারিয়ে না গেলে অবশ্যই পাসপোর্টের তথ্য প্রদান করে এরপর পাসপোর্ট নবায়ন করতে হবে। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে জিডি করার পর জিডির কপি নিয়ে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পাসপোর্ট আবেদন করতে যে পরিমাণ টাকা লাগে, পাসপোর্ট রিনিউ করতেও একই পরিমাণ টাকা লাগে। পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং মেয়াদের উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট ফি কমবেশি হয়ে থাকে।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কি রিনিউ করা যায়?

হ্যাঁ, আপনার পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই চাইলে পাসপোর্টটি রিনিউ করতে পারবেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও পাসপোর্ট রিনিউ করা যায়। তবে, যেকোনো সময় জরুরি প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণের দরকার পড়লে বা অন্য কাজে পাসপোর্টের প্রয়োজন হলে মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট কোনো কাজে আসবেনা।

তাই, পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই পাসপোর্টটি রিনিউ করে নিতে হবে। ভিসা আবেদন করার সময় পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের বেশি থাকতে হয়। তাই, আপনার পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে অবশ্যই রিনিউ করে নিবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে?

পাসপোর্ট রিনিউ করতে পাসপোর্ট আবেদন করার মতো সব ধরনের কাগজপত্র লাগে। যারা পাসপোর্ট রিনিউ করতে চাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন হবে।

  1. 3R সাইজের ছবি
  2. ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  3. নাগরিক সনদপত্রের কপি
  4. শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষার সনদপত্র বা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড
  5. আবেদন ফি ব্যাংক ড্রাফ্‌ট করে পাওয়া এ-চালান এর কপি
  6. নিকাহনামা বা কাবিননামা (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)
  7. স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের ফটোকপি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)
  8. পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
  9. ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস/বিদ্যুৎ/পানি)
  10. পূর্বের পাসপোর্টের তথ্য

উপরোক্ত এসব ডকুমেন্ট সাবমিট করার মাধ্যমে আপনার পূর্বের পাসপোর্টটি নবায়ন করে নিতে পারবেন খুব সহজেই। পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করতে পারবেন অনলাইনেই।

পাসপোর্টের মেয়াদ কত বছর?

পাসপোর্টের মেয়াদ সাধারণত ৫ বছর থেকে ১০ বছর হয়ে থাকে। পাসপোর্ট আবেদন করার সময় বা পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় আপনি কত বছর মেয়াদের পাসপোর্ট চান, সেটি সিলেক্ট করতে পারবেন।

পাসপোর্টের মেয়াদের উপর নির্ভর করে পাসপোর্ট ফি কমবেশি হয়ে থাকে। এছাড়া, পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যার কারণেও ফি কমবেশি হয়।

এছাড়াও পড়ুন —

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে জরিমানা কত?

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে বর্তমানে কোনো জরিমানা দিতে হয়না। তবে, পূর্বে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে জরিমানা দিতে হতো। এছাড়া, প্রতি বছরের জন্য ১৫% ভ্যাট দেয়া লাগতো।

বর্তমানে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও কোনো জরিমানা দিতে হবেনা। আপনার ইচ্ছেমতো সময়ে পাসপোর্টটি আবারও রিনিউ করতে পারবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কত টাকা লাগে?

পাসপোর্ট রিনিউ করতে ৫ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ৪,০২৫ টাকা লাগে। ৫ বছর মেয়াদি ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ৬,৩২৫ টাকা লাগে। ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ৫,৭৫০ টাকা লাগে এবং ১০ বছর মেয়াদি ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ৮,০৫০ টাকা লাগে।

এছাড়া, পাসপোর্টের ডেলিভারির ধরনের উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট ফি এর পরিমাণ আরও বেশি হয়ে থাকে। উপরে উল্লিখিত ফি শুধুমাত্র রেগুলার ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

পাসপোর্টে ৬ মাসের কম সময় থাকলে কি ভ্রমণ করা যাবে?

পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম সময় থাকলে সাধারণত অনেক দেশে থেকেই ভিসা প্রসেসিং করা হয়না। সেক্ষেত্রে, আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের বেশি সময় হতে হবে। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রে পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম থাকলেও কিছু দেশে ভ্রমণ করা যেতে পারে।

যেসব দেশ ৬ মাসের কম মেয়াদ থাকলেও ভিসা প্রসেসিং করে, সেসব দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে, পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম হলে পাসপোর্টটি আবারও রিনিউ করা উচিত।

মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট দিয়ে কি ভ্রমণ করা যায়?

না, মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট দিয়ে ভ্রমণ করা যায়না। পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম সময় থাকলে অনেক দেশ থেকেই ভিসা প্রসেসিং করেনা। তাই, পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট দিয়ে ভ্রমণ করার সুযোগ থাকবেনা।

শেষ কথা

পাসপোর্ট এর মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করতে হবে এই বিষয়টি নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও, পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন এই পোস্ট থেকে। এমন আরও তথ্য জানতে ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *